"1946 Calcutta Killings "-এর ইতিহাস আমাদের জানতে দিন








'দাঙ্গা' কথাটি শুনলে যেন আমরা চমকে উঠি ।সর্বনাশ ,এ যে প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক ব্যাপার .একথা মনে করা মানে চুলকে ঘা করা ।আমরা তো ধর্মনিরেপেক্ষ ,সম্প্রীতির কথা বলি ,পুরোনো কথা ভুলে যাওয়াই তো আমাদের কর্তব্য। Forgive and forget ,.ক্ষমা কর আর ভুলে যাও।ইতিহাস কখনও মুছে যায় না ,তাকে ভোলা যায় না, সেকুলারিজমের নামে সত্যকে চেপে রাখা যায় না ।তার বহিঃপ্রকাশ এক দিন না একদিন হতে বাধ্য ।


বঙ্গবিভাজনের আগে ১৯৪৬ সালে কলকাতার দাঙ্গা ,নোয়াখালীর হিন্দুদের উপর গণনির্যাতন ,ধর্ষণ ,হত্যা ,ফলস্বরূপ এক কোটির উপর হিন্দু ভারতে আসতে বাধ্য হয়। উদ্বাস্তু জীবনের সেই দুর্দশার কথা আগামী প্রজন্মকে জানানো কোনো অপরাধ নয় ।ইহুদিরা (ইসরাইল)তাদের নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর ১২০০ বছর ধরে মাতৃভাষা হিব্রু  ভোলে নি ,পবিত্র জেরুজালেম ভোলেনি ,তাদের বংশধরদের দেশত্যাগের কাহিনী শুনিয়ে বুঝিয়ে দেশভক্তির পাঠ পড়িয়েছিলেন ।যার পরিণামে আবার পবিত্র জেরুজালেমে স্বাধীন রাষ্ট্রে তাদের ফিরে আসা সম্ভব হয়েছে ।

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হল।এই কয়েকটা বছরে আমরা ভুলে যাব সব ঘটনা ?আমাদের বাংলা ভাগ হয়ে বাংলাদেশ হল ।শ্যামাপ্রসাদ জিন্নার হাত থেকে পশ্চিমবঙ্গকে ছিনিয়ে আনলেন ।আমরা ভুলে যাব সে কথা ?জিন্নার সমর্থকরা শ্যামাপ্রসাদকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে এখনও ।অপ্রিয় বলে চেপে যাওয়ার চেষ্টা --তা হয় না ।

সাম্প্রতিক পরিচালক মিলন ভৌমিকের "১৯৪৬ ক্যালকাটা কিলিংস" (হিন্দি ) এবং বাংলায় "দাঙ্গা" চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। ভারত সরকারের সেন্সর বোর্ড অনুমতি দিলেও পশ্চিমবঙ্গে তা না দেখানোর জন্য সিনেমা হলগুলিকে ভয় দেখানো হচ্ছে,সিনেমা না দেখানোর জন্য বাধ্য করা হচ্ছে ।এক কথায় পশ্চিমবঙ্গে ছবিটি নিষিদ্ধ ।কিন্তু সারা ভারতে ফিল্মটি দেখাতে কোনো বাধা নেই ।এক সময় 'পদ্মাবতী' প্রদর্শন নিয়ে যখন সারা ভারতে বিরোধিতা হচ্ছিল,রাজপুতরা তাদের সমাজের অপমান বলে মনে করেছিল ,তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা প্রদর্শন করার জন্য বিশেষ আগ্রহ দেখিয়ে বিভিন্ন সিনেমা হলে তা দেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন ।কিছুদিন আগে 'কবীর'(মুসলিম সমাজকে প্রাধান্য দিয়ে)সিনেমা মুক্তি পেল কিন্তু দাঙ্গা চলচ্চিত্রের বেলায় না কেন ?কারণ কলকাতায় হিন্দু নির্যাতনের দলিল --তাই !রাজ্য সরকারের এই দ্বিচারিতা কেন ?

মানুষের প্রতি মানুষের অত্যাচার ---মানবাধিকার ভঙ্গের দৃশ্য,হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কাহিনীকে চেপে রাখা ,ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য ---এই অপচেষ্টা ।হিন্দু নির্যাতনের মুখোশ খুলে দেওয়াই ছিল এই চলচ্চিত্রটির উদেশ্য ।হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে হিংসা সৃষ্টির জন্য নয়, ব্যবধান তৈরি বা ঘৃণা জন্মাবার জন্য এই চলচ্চিত্র নয় ।সত্য কথা বললে ঘৃণা তৈরি হয় না কিন্তু সত্য চেপে দিয়ে আবোল তাবোল পড়ালে পরবর্তীতে ঘৃণার মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে ।

শ্যামাপ্রসাদ মনে করতেন ,"হিন্দুধর্ম হল সনাতন ধর্ম "।ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাজনের তিনি বিরোধিতা করেছিলেন ।হিন্দু -স্থানকে কবরিস্থান বানিয়ে পাকিস্তানে পরিণত করার তিনি ঘোর বিরোধী ছিলেন ।তার প্রচেষ্টায় পশ্চিমবঙ্গ আজ ভারতের মধ্যে রয়েছে ।দেশ বিভাজনের ইতিহাস ,পূর্ববাংলা থেকে হিন্দু বিতরণের প্রেক্ষাপট কেন লুক্কায়িত ?তার উত্তরের জন্য এই চলচ্চিত্র ।আগামী প্রজন্মকে এই সত্যটা জানতেই হবে ।

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন ----

                               "সত্যের জন্য সব কিছুকে ত্যাগ করা চলে কিন্তু
                              কোন কিছুর জন্যেই সত্যকে বর্জন করা চলে না "

Comments

  1. Agun k jemon chhai chapa dile o se thik beriye ase temni satya k kono kichhu chapa diye dabiye rakha jai na,,,,,satya shwashoto.

    ReplyDelete

Post a Comment